
পেশায় রং মিস্ত্রী হলেও পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় তার অবিরাম ছুটেচলা। সেই ৯০ সাল থেকে হতদরিদ্র রং মিস্ত্রী জহির রায়হান প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছেন। এ কারণে বহুবার তিনি খবরের শিরোনাম হয়েছেন। শুধু পরিবেশ রক্ষায় যে তিনি অবদান রাখছেন তা কিন্তু নয়। তিনি এতিম মেয়ে নিজ ঘরে এনে সন্তানদের লালন পালন করেন। তাদের হাতের কাজ শিখিয়ে ভালো পাত্র পেয়ে বিয়েও দিয়েছেন। নিজে সংসার চালাতে না পারলেও তিনি এলঅকার দরিদ্র ছেলে মেয়েদের বই কিনে দেন। জেলা শহরের প্রাচীরে প্রাচীরে গাছ লাগানো, বাল বিয়ে রোধ, ধুমপানের কুফল নিয়ে নানা শ্লোগান অংকন করেন জহির। জহিরের শ্রম বৃধা যায়নি। এরবার তিনি জাতীয়ভাবে অবদান রাখায় ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ পদক পেয়েছেন। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে জহির রায়হান এ পদক গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ও বৃক্ষরোপণে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখার জন্যে জাতীয় পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও ক্যাপটিভ ব্রিডিং কর্মসূচীতে অবদান রাখায় ঝিনাইদহের জহির রায়হানকে স্বর্ণপদক প্রদাণ করা হয়। ২ ভরি ওজনের স্বর্ণপদক, ১ টি সনদপত্র ও ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদাণ করা হয় তাকে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের কিয়াম উদ্দীন মোল্লার ছেলে জহির রায়হান। ৩৫ বছর ধরে তিনি পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছেন।
পুরস্কার লাভের পর জহির রায়হান শনিবার দুপুরে গনমাধ্যমকর্মীদের জানান, রংমিস্ত্রী’র আয় থেকে বাচানো টাকা দিয়ে তিনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ৬ হাজার বৃক্ষরোপন করেছেন। ২০০২ সাল থেকে বন্যপ্রাণী রক্ষায় গাছে গাছে মাটির কলস বাঁধা, পাখি উদ্ধার, শিকারীদের হাত থেকে বিলুপ্তপ্রায় পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করণ, জেলেদের জালে আটকা পড়া গুইসাপ, সাপ, শিয়াল উদ্ধারের পর অবমুক্তকরনের কাজ করে চলেছেন তিনি। এ বছর তীব্র তাপদাহের মাঝে পাখিদের জন্য গাছে গাছে পানির পাত্র বেঁধে দেন তিনি। বন্যপ্রাণী রক্ষায় অসামান্য অবদান রাখায় জহির রায়হান এ পদকে ভুষিত হনে। তার এই অর্জন ঝিনাইদহবাসীর জন্য গর্বের বলে মনে করেন স্থানীয় কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল করিম।