মওলানা ভাসানী স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগারের প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্ন

মোঃ মনিরুল ইসলাম  ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি 
প্রকাশের সময়: বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ । ৭:৩৬ অপরাহ্ণ

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে মওলানা ভাসানী স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগারের প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।  মাওলানা ভাসানী স্মৃতি সেবা সংঘের ব্যবস্থাপনায়, ভাসানী গবেষণা প্রকল্প, ভাসানী পরিষদ, সুধা ফাউন্ডেশন ও অলিউদ্দিন মেহেরুল ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় মওলানা ভাসানী স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগারের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে।

চলতি বছরের ২৫ জুন থেকে মওলানা ভাসানী স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন না হলেও শনি থেকে শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত পরিদর্শনের জন্য সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। পরিদর্শনের জন্য ২০টাকা করে  পরিদর্শন ফি প্রদান করতে হয়। উক্ত টাকা এই জাদুঘর ও পাঠাগার উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা হবে বলে জানা যায়।

মওলানা ভাসানী স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগারে  ভাসানীর ব্যবহৃত, বেতের টুপি, কাঠের সিন্দুক,  টুপি, চেয়ার, হেলনা ব্রেঞ্চ, তার সহধমর্নী হামিদা খানম ভাসানীর ব্যবহৃত তৈজসপত্র, কাঠের সিন্দুক, কাঠের জল চৌকি, কাঠের টেবিল স্থান পেয়েছে।

ভাসানী পরিষদের সদস্য সচিব (মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর দৌহিত্র যিনি আবুবক্কর খান ভাসানীর ছেলে)  আজাদ খান ভাসানী বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন না হলেও শনি থেকে শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ২০টাকা পরিদর্শন ফি প্রদানের মাধ্যমে এই জাদুঘর পরিদর্শন করতে পারবেন। পরিদর্শন ফির অর্থ এই জাদুঘর ও পাঠাগার উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা হবে।  তিনি আরো বলেন, প্রায় ৬০ বছরের পুরনো স্মৃতি বিজড়িত কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভাসানী নগর গ্রামের দীর্ঘদিনের উপেক্ষিত এই বাড়িতে স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার নির্মাণে যারা আর্থিকভাবে, শ্রম দিয়ে, উৎসাহ দিয়ে পাশে ছিলেন তাদের প্রতি জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

 

জয় হোক গণমানুষের। জয় হোক গণমানুষের নেতা মওলানা ভাসানীর।  জানা যায়, মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর ১৯৪৮ সালের শেষের দিকে এই “ভাসানী স্মৃতি পল্লী” বাড়িটি ক্রয় করেন। এই বাড়িতে তার কনিষ্ঠ সহধর্মিনী হামিদা খানম সন্তান-সন্ততি নিয়ে বসবাস করতেন।

 

মূলত আসামে বসবাসরত তার ভক্ত অনুসারীদের জন্যই তিনি এখানে বসতি করেছিলেন। ১৯৬৫ সালের ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক “ভূরুঙ্গামারী কৃষক সম্মেলন” উপলক্ষে একটানা অনেক দিন তিনি এখানে অবস্থান করেন। এই সময়ে তিনি এখানে দরবার হল, মুসাফির খানা, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, দিঘী, প্রভৃতি গড়ে তোলেন।

 

দাতব্য চিকিৎসালয় ও পোস্ট অফিস করার ইচ্ছা ছিল তার। নিজ হাতে তৈরি দরবার হলে বসে তিনি বৈঠক করতেন। তার টানে এখানে অনেক নেতাকর্মীরা আসতেন। ১৯৬৫ ভূরুঙ্গামারী কৃষক সম্মেলনে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানকে উদ্দেশ্য করে দ্বিতীয়বারের মতো “আসসালামু আলাইকুম” উচ্চারণ করেন। পরবর্তীতে এই বাড়ি কে ঘিরেই এতদাঞ্চলে ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান আর ৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধ সংঘটিত হতে থাকে। ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে তিনি দেশের সংহতি রক্ষার্থে জনমত গঠনের জন্য সীমান্ত সফরের এক পর্যায়ে সর্বশেষ ভূরুঙ্গামারি এসেছিলেন। একই বছর ১৭ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

প্রধান সম্পাদক: মোঃ তোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ মাহাবুবুল আলম ওহাবুল, প্রকাশক: মোঃ বখতিয়ার ঈবনে জীবন, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: চিলাহাটি, নীলফামারী। যোগাযোগ: +৮৮০ ০১৭১৮৩২৪৭৮৬ E-mail: infobanglarawaz@gmail.com

প্রিন্ট করুন