
গাইবান্ধা জেলার নদ-নদীগুলোতে ফের পানিবৃদ্ধি হয়েছে। ফুলছড়ি পয়েন্টে যমুনা ও ব্রাহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দ্বিতীয় দফার বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়ছে সহস্রাধিক পারিবার। কোথাও কোথাও ভাঙছে বাঁধ ও রাস্তা। এতে করে হু হু করে পানি প্রবেশ করছে। মানুষের ঘরবাড়িতে হাঁটুপানি জমেছে। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালের দিকে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়- গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ৬৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার করতোয়া গোবিন্দগঞ্জে চকরহিমাপুর পয়েন্টে ১০২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েকদিনের অব্যাহত বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে গাইবান্ধায় সব নদ-নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার তিস্তা, যমুনা ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি, কামারজানি, মোল্লারচর, ঘাগোয়া ও ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি, ফজলুপুর, এরান্ডাবাড়ি এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়, তারাপুর, হরিপুর ইউনিয়ন ও সাঘাটা উপজেলা ভরতখালী ও হলদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
অন্যদিকে নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নতুন করে সদরের মোল্লার চর ও ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
বিদ্যামান পরিস্থিতিতে জেলার চলাঞ্চলের রাস্তাঘাটসহ বাড়ি-ডুবে গেছে। অনেক ফসল পানি নিচে তলে গেছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এসব এলাকার পানিবন্দি মানুষরা গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ছেন। তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট।
কাপাসিয়া এলাকার বাসিন্দা আজগর আলী বলেন, চোখের পলকে আমার বাড়িতে পানি ওঠেছে। আপাতত পানির ওপর বসবাস করছি। তবে খাবার পানি ও টয়লেট ব্যবস্থা নিয়ে বেকায়দা পড়ছে।
ফজলুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনছার আলী মন্ডল বলেন, বন্যায় এ ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক বাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। সময় যত বাড়ছে ততোই নতুন নতুন এলাকায় পানি ডুকছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, অব্যাহত বর্ষণ ও উজনের ঢলে গাইবান্ধায় সবগুলো নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সব ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পানি প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজী নাজিদ রসুল বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরণের কার্যক্রমণ চালানো হচ্ছে। অধিক ঝুকিঁপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে।