
পঞ্চগড় প্রেসক্লাব জেলার একটি ঐতিহ্যবাহি প্রেসক্লাব। ১৯৭৪ সালে এই পেশাদার সাংবাদিকদের নিয়ে ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। পঞ্চগড় জেলা তথা দেশের উন্নয়নে এই প্রেসক্লাবের অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। মফস্বলের বেশ কিছু তারকা সাংবাদিকের জন্মও দিয়েছে এই প্রেসক্লাব। কিন্তু অত্যন্ত দু:ক্ষের বিষয় স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের দু:শাসনের সময় প্রেসক্লাবটি নিজস্ব স্বকিয়তা হারিয়ে ফেলে। ফ্যসিবাদ এবং বৈষম্যের আবরনে এই প্রেসক্লাব হয়ে ওঠে ভয়ংকর খেলাঘর। প্রতিনিয়ত মেধাবী, তরুণ এবং অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ প্রবিণ সাংবাদিকদের কোনঠাসা করে নিজেদের ইচ্ছে মতো গুটি কয়েক সাংবাদিক একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। ঐতিহ্যবাহী এই প্রেসক্লাব গড়ে ওঠার পেছনে যে মহান মানুষগুলোর অবদান রয়েছে তাদেরকে তারা ভুলে যায়। সৃজনশীল সাংবাদিকদের সদস্যপদ থেকে বঞ্চিত করা হয়। একটি সংগঠন গঠনতন্ত্রের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। কিন্তু সংগঠনটির কোন গঠনতন্ত্র না থাকায় অপরিকল্পিত ভাবেই পরিচালিত হতে থাকে। আরও নানা বিষয়ে বৈষম্যের চুড়ান্ত রুপ ধারণ করে। মাত্র ২৬ সদস্যের এই প্রেসক্লাবে আন্ত:কোন্দল চরম পর্যায়ে চলে যায়। পদ এবং পদবী নিয়ে চলতে থাকে গোপন অপরাজনীতি। ৫ আগষ্ট ২০২৪ ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার হাসিনার পতন ঘটে। বাংলাদেশ অর্জন করে দ্বিতীয় স্বাধিনতা। এরপরও পেশাদার সাংবাদিকদের সদস্য না করে তারা নানা রকম আন্ত:কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে। ঠিক এই অবস্থায় গত ২১ আগষ্ট বঞ্চিত এবং বিক্ষুব্দ্ধ সাংবাদিকদের একটি দল প্রেসক্লাবে গিয়ে তাদেরকে সদস্য করার আহ্বান জানায়। প্রেসক্লাবের পুরোনো সদস্যদের অনেকে বিক্ষুব্দ্ধ সাংবাদিকদেরকে তাৎক্ষণিক কমিটি ঘোষণার আহ্বান জানান। তারা সভাপতি সেক্রেটারি হলে বিক্ষুব্দ্ধ সাংবাদিকদেরকে সদস্য করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নিজেদেরকে সভাপতি সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করার জন্য বিক্ষুব্দ্ধ সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। বিক্ষুব্দ্ধ সাংবাদিকরা তাদের দুর্বলতা এবং পদবী পাওয়ার সুচতুর কৌশল বুঝতে পেরে নিজেদেরকে নিয়েই একটি কমিটি ঘোষণা করেন। ঐতিহ্যবাহী এই প্রেসক্লাবের প্রতি পঞ্চগড় জেলার প্রত্যেকটি মানুষের গভীর শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং ভালোবাসা রয়েছে। তারা প্রেসক্লাব সংস্কারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও হঠাৎ করে কমিটি ঘোষণায় বিব্রত হয়ে পড়ে। অনেকেই এই বিব্রত পরিস্থিতি থেকে ঐতিহ্যবাহি প্রেসক্লাবটিকে সুগঠিত করার জন্য আহ্বান জানান। সাধারন মানুষ, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, রাজনীতীবীদ , ছাত্র সমাজ সবাই একত্রিত হয়ে প্রেসক্লাবটিকে পুরোনো ঐতিহ্যে ফিরিয়ে এনে একটি গঠন ও মননশীল প্রেসক্লাবে রুপান্তরিত করার উদ্যোগ নেন। গত ২৪ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে বিকেল ৫ টায় চেম্বার ভবনের মিলনায়তনে এ বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় । সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লি উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ,জামায়াতে ইসলামীর আমির ইকবাল হোসেন, সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, জাগপার সভাপতি শাহারিয়ার বিপ্লব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি, মোকাদ্দেসুর রহমান সান, সহ প্রায় শতাধিক সাংবাদিক, সুশিল সমাজ, রাজনীতীবীদ, ব্যবসায়ি সহ সাধারন মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সকলের মতামতের ভিত্তিতে এবং সম্মতি ক্রমে প্রেসক্লাব পুনর্গঠন এবং সংস্কারের জন্য তারা দুটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। উপদেষ্টা কমিটি ও আহ্বায়ক কমিটি। সভায় সিদ্ধান্ত হয় উপদেষ্টা কমিটির পরামর্শ এবং সহযোগিতা নিয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে আহ্বায়ক কমিটি একটি গঠনতন্ত্র লিপিবদ্ধ করে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেবেন।
উপদেষ্টা কমিটি :
প্রধান উপদেষ্টা : মো: তৌহিদুল ইসলাম
উপদেষ্টা কমিটির সদস্য :
শাহারিয়ার বিপ্লব
এড: আদম সুফী
এড: আকবর আলী
এড: আব্দুল বারি
নাসির উদ্দিন সরকার
মাহাবুবুল আলম মন্টু
মো: ফজলে রাব্বি
মোকাদ্দেসুর রহমান সান
আহ্বায়ক কমিটি :
আহ্বায়ক : সরকার হায়দার
সদস্য : সামসুদ্দিন চৌধুরী কালাম
মোসারফ হোসেন
আব্দুল্লাহ আল মামুন রনিক
ইনসান সাগরেদ
বদরুদ্দোজা প্রধান বাধন
সাব্বির হোসেন
শহিদুল ইসলাম শাহীন
শেখ সম্রাট হোসেন
আবু নাঈম
উপস্থিত সকলে এই উদ্যোগ ও নতুন কমিটিকে স্বাগত জানান। সকলে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।