হবিগঞ্জের সাবেক এমপি ও আ.লীগ নেতা মজিদ খান ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার

হবিগঞ্জ-২(বানিয়াচং -আজমিরীগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান (৬০) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর উত্তরা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ডিবির একটি দল গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উত্তরার একটি এলাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন। বিষয়টি হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারকে জানালে হবিগঞ্জ থেকে একদল পুলিশ তাকে আনার জন্য রাতেই
ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। আজ হবিগঞ্জে আনার কথা রয়েছে। জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বানিয়াচংয়ে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নয় জন নিহত হওয়ার মামলায় আব্দুল মজিদ খান ২ নম্বর আসামি। এছাড়াও হবিগঞ্জ শহরে রিপন শীল হত্যা মামলায় তার নাম ৩ নম্বরে রয়েছে বলে ওসি আলমগীর কবীর জানিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিশু হাসান মিয়া (১২) নিহতের ঘটনায় সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ খানসহ ৪ শতাধিক জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত (২২ আগস্ট) নিহত হাসানের পিতা ছানু মিয়া বাদি হয়ে বানিয়াচং থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এ ছাড়া শহরের রাজনগর এলাকার বাসিন্দা ফজল মোহাম্মদের ছেলে ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সালেহ আহমেদ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বরাবর মজিদ খানসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেন।
তাছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চোখে গুলিবিদ্ধ রিমন মিয়ার মা মরম চান বাদী হয়ে মজিদ খানসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১, এ মামলাটি করেন। শুধু তাই নয়, বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নয়জন হত্যার ঘটনায় মজিদ খানসহ ৩০০ জনের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এতে ২৬৪ জনের নামোল্লেখ ও বাকিরা অজ্ঞাতপরিচয় আসামি। এ ছাড়াও আরও একাধিক মামলায় তাকে আসামি করা হয়।
আব্দুল মজিদ খান ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী প্রার্থী ময়েজ উদ্দিন রুয়েলের কাছে হেরে যান। পরে হবিগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে দায়িত্ব পান। ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র জনতা শহরের টাউন হল সড়কের বাসাটি ভেঙ্গে লুটপাট করে নিয়ে যায়। ওইদিনই তিনি লাইভে এসে শহরবাসীর উদ্দেশ্যে অনেক কিছু বলে আত্মগোপনে চলে যান। অনেকে ধারণা করছিলেন তিনি বিদেশে চলে গেছেন। তাছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার বাদী তিনি।