পান চাষেই কৃষকের ভাগ্য বদল

খাওয়াও একখান পান,হুনাইমো বাংলা গান,
গান হুনায়া ভইরা দিমু তুমার মনপ্রাণ।
বাঙালি মানুষের ঠোট লাল করা কিংবা বাঙালি নারীর মুখশ্রী বৃদ্ধির এক বিলাশিতার নাম পান।পানের নাম আসলেই মনে হয়ে যায় এমন অসংখ্য গানের অন্তরা।পান বাঙালি খানদানও বটে।বাংলাদেশের কিছু স্থানে পানের আবাদ বেশি লক্ষ্য করা যায় ফলনেও থাকে স্বনির্ভরতা।
ময়মনসিংহের নান্দাইলে পানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বেশ খুশি এ অঞ্চলের কৃষক। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক পরিচর্যা ও জমি চাষের উপযোগী হওয়ায় এ অঞ্চলের চাষিরা বেশ ভালো ফলন পেয়েছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি বছর উপজেলায় ৭৫হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। এর প্রতি একর জমিতে পানের উৎপাদন ব্যয় পাঁচ-ছয় লাখ টাকা, আর তা বিক্রি হয় ১০-১২ লাখ টাকায়। উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর, শেরপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় কয়েক হাজার পান চাষি রয়েছে।
এখানকার পান খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আকারে বড় এবং পান খেতে সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদা রয়েছে দেশ-বিদেশে । ভালো ফলন এবং বাজার মূল্য পেয়ে হাসি ফুটেছে পান চাষীদের মুখে। পান খাওয়া আমলিদের মুখ ভরে পান চিবিয়ে গল্প রসে পাচ্ছে অন্যরকম আনন্দ।
নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পান চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য ফসলের তুলনায় পানের চাষ বেশ লাভজনক। এছাড়া পান চাষে তুলনামূলকভাবে খরচ কম ও লাভ বেশি। একবার পানের বরজে রোপন কাজ করলে ১০ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত বরজে তেমন কাজ করতে হয় না। তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ফসলের চেয়ে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ও কম করতে হয়। প্রতি বিঘা জমিতে পান চাষ করে প্রতি বছর ২-৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব বলে জানান চাষীরা।
উপজেলার জাহাঙ্গীর পুর ইউনিয়নের বাতুয়াদী গ্রামের পান চাষী মোঃ রিটন মিয়া ও আবুল হোসেন জানান, আমাদের এলাকায় অন্য ফসলে তুলনায় কৃষকরা পান চাষে ঝুঁকছেন বেশি।জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের দক্ষিন জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে মাঠের পর মাঠ পানের বরজ, কেউ খেত থেকে পান তুলছেন, কেউ করছেন খেতের পরিচর্যা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, পান লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে পান চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক পরামর্শে বিষমুক্ত পানের বাম্পার পালন হয়েছে।