খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের পুনর্গঠন: নিন্দা ও প্রশংসার মাঝে নতুন নেতৃত্বের উদ্ভব

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন নিয়ে সম্প্রতি নানা বিতর্ক এবং আলোচনা সমাপ্তির পথে পৌঁছেছে। ৭ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নতুন অন্তর্বর্তী পরিষদ ঘোষণা করা হয়। সবচেয়ে বড় চমক হল, এই প্রথমবারের মতো জেলার ইতিহাসে নারী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন জিরুনা ত্রিপুরা।
নতুন অন্তর্বর্তী পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব রয়েছে, যার মধ্যে ১৪ জনই নতুন মুখ। এই ১৫ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন বঙ্গমিত্র চাকমা, অনিময় চাকমা, নিটোল মনি চাকমা, কংজপ্রু মারমা, কুমার সুইচিংপ্রু সাইন, সাথোয়াই প্রু চৌধুরী, ধনেশ্বর ত্রিপুরা, শেফালিকা ত্রিপুরা, প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা, মো: শহিদুল ইসলাম, আবদুল লতিফ, মো: মাহবুবুল আলম, জয়া ত্রিপুরা, ও অ্যাডভোকেট মনজিলা সুলতানা।
এদিকে, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ইতিহাসে এটি দশম অন্তর্বর্তী পরিষদ, যা ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত পরিষদের পর প্রথমবারের মতো নতুন কমিটি গঠন হলো।
এই পুনর্গঠন নিয়ে সামাজিক মাধ্যম এবং রাজনৈতিক চক্রে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
নিনি মারমা ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, “আজ বুঝলাম এতদিনে পাহাড়ে আন্দোলন সংগ্রামে ত্রিপুরাদের ভূমিকা না রাখার বিষয়!”
সাংবাদিক সমির মল্লিক লিখেছেন, “এই পরিষদ নিয়ে জেলাবাসী কি করবে? এর চেয়ে ‘কলাগাছ চেয়ারম্যান’ ভালো ছিল।”
এছাড়া, সাংবাদিক শাহরিয়ার ইউনুস তার পোস্টে দাবি করেছেন, “একদল লুটেপুটে খেয়ে গেছেন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে, আর এখন হাস্যকর পরিষদ গঠন হল।”
তবে, কিছু সদস্য এই নতুন পরিষদ গঠনকে স্বাগত জানিয়েছেন। ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি নয়ন ত্রিপুরা জানান, “আশা করি নতুন চেয়ারম্যান ও সদস্যরা অতীতের মতো হতাশ করবেন না।”
খাগড়াছড়ির বাসিন্দারা মনে করছেন, নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে পার্বত্য জেলা পরিষদ জনগণের আশা পূরণে ভূমিকা রাখবে। তবে, বিরোধীদের মতে, এই পরিষদ গঠন এমন সময় হয়েছে যখন খাগড়াছড়ির মানুষ নানা সঙ্কট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার।
এভাবে, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের পুনর্গঠন নিয়ে সমালোচনা এবং প্রশংসা উভয়ই রয়েছে। আগামীর নেতৃত্বের কার্যক্রমের উপরেই নির্ভর করবে, এই পরিবর্তন কীভাবে জনগণের দোরগোড়ায় উন্নয়ন নিয়ে আসবে।