আক্কেলপুর মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা ধর্ষণের দাবি স্থানীয়দের

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন ষাটোর্দ্ধ এক মহিলাকে নিজ ঘর থেকে অচেতন ও বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। তার শরীরে নির্যাতন ও নিম্নাঙ্গে কালচে দাগ ফোলা দেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দাবি করছেন স্থানীয় সাবেক সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর বন্দনা রানীসহ স্থানীয়রা। এঘটনায় মঙ্গলবার গভীর রাতে তিনি বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ঘটনাটি পৌর সদরের তুলসীগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকার নবাবগঞ্জ পারঘাটি এলাকায় ঘটেছে। নির্যাতনের শিকার মহিলাটি জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি এলাকায় ঘুরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
বাদি, স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অজ্ঞাত পরিচয়ের মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাটি গত ২০ বছর আগে ওই এলাকায় এসে থাকতে শুরু করেন। তিনি এলাকার বিভিন্ন স্থানে দিনে ভবঘুরে হয়ে ভিক্ষা করে রাতে তুলসীগঙ্গা নদীর তীরে পারঘাটি এলাকায় একটি টিনের ঝুপড়ি ঘড়ে থাকতেন। প্রতিবেশি হাসি রানী তাকে নিয়মিত খাবার দিতেন। মঙ্গলবার সকালে খাবার খেতে না আসায় প্রতিবেশী হাসি রানী তাকে খাবার দিতে গেলে তাকে অচেতন ও বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান তারা। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। কিন্তু প্রতিবেশিরা দরিদ্র হওয়াই তারা আবার বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসেন। সন্ধ্যায় মহিলাটির অবস্থা খারাপ হতে থাকলে স্থানীয় সাবেক সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরের সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে আবারও হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য জয়পুরহাট আধুনিক সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা।
প্রতিবেশী হাসি রানী বলেন, প্রতিদিন ওই পাগল মহিলাটি আমাদের বাসায় এসে খাওয়া দাওয়া করে। মঙ্গলবার সকালে সে খেতে না আসলে তার ঘরে গিয়ে দেখি সে বিবস্ত্র অবস্থায় অচেতন হয়ে পড়ে আছে। পরে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
সাবেক সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর বন্দনা রানী বাগচী জানান, ওই মহিলাটি একা একটি ঝুপড়ি ঘড়ে থাকে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত ক্ষত জখম ছিল। তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থান ও নিম্নাঙ্গে কালো দাগ সাথে ফোলা দেখে মনে হচ্ছে তাকে নেশা দ্রব্য খাওয়ায়ে অচেতন করে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। বর্তমানে সে জয়পুরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার কোন স্বজন না থাকায় আমি নিজে বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
জয়পুরহাট আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক বলেন, নির্যাতনের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। ধর্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। থানার একজন উপ-পরিদর্শকের তত্বাবধানে জয়পুরহাট হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। আমরা ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি।