ঝিনাইদহে মাটির নিচ থেকে বের হচ্ছে গ্যাস

টিউবওয়েল পুঁতে যাওয়ার সময় ঘটে এমন আজব ঘটনা। মাটির নিচ থেকে হঠাৎ করেই বুঁদবুঁদ উঠতে থাকে। প্রথমে বুঁদবুঁদ দেখে সবাই হকচকিয়ে গেলেও পরে পাইপ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রান্নার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এমনকি প্রতিবেশীরাও সুযোগ পেলেই রান্না করতে আসছে ঝিনাইদহের পোড়াহাটি ইউনিয়নের মধুপুর মধ্যপাড়া গ্রামের হারান বিশ্বাসের বাড়িতে। হারান বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে দেখতে হবে যে, পুরো পরিবার শীতে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে আগুন পোড়াচ্ছে। অত্যন্ত দরিদ্র এ পরিবারটির কর্মকাণ্ড দেখতে প্রতিবেশীরাও হাজির হচ্ছে। হারান বিশ্বাসের ছেলে কৃষ্ণ কুমার জানান, তাদের পূর্বের টিউবওয়েলের পানিতে অতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গেলে, এ বছরের আগস্ট মাসের ২০ তারিখে নতুন একটি টিউবওয়েল খনন করতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটে। কিছুদিন টিউবওয়েলের আশপাশে বুঁদবুঁদ ওঠতে থাকে।
কৃষ্ণ কুমার আরও জানান, এরপর তিনি পুরো এলাকা বালি ও মাটি দিয়ে বন্ধ করে পাইপের মাধ্যমে আগায় বাঁশ বেঁধে ইটের চুলায় বসিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। তখন থেকে গত ৩ মাস ধরে বাড়ির সকল রান্না আগুনে চলছে। এই আগুন একবারও নিভে যায়নি। বর্তমানে প্রতিবেশীরাও এসে নানা ধরনের রান্না, যেমন বাত ও তরকারি, করে নিয়ে যাচ্ছে।
পোড়াহাটি ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আলম মীর জানান, এই ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি যে, তারা এসে এই ঘটনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুক। বাড়ির মালিক হারান বিশ্বাস বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। আমার পূর্বের টিউবওয়েলে অতিরিক্ত আর্সেনিক ছিল, তাই নতুন টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য সরকারি কলের আবেদন করি।
গণপূর্ত অধিদফতর যে টিউবওয়েল স্থাপন করেছে তা এখন আর ব্যবহার করতে পারছি না। এখন আনন্দের সাথে ভয়ও লাগছে, কখন কী হয়। আমাদের দাবি, সরকারিভাবে পর্যালোচনা করা হোক, আসলেই কি মাটির নিচ থেকে গ্যাস উঠছে।’ ঝিনাইদহ সদর উপজেলা ইউএনও রাজিয়া আক্তার চৌধুরী জানান,‘আমি এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছি এবং আবারও খোঁজ নেব।’হারান বিশ্বাসের স্ত্রী আরু বালা জানান, গ্রামে এই ঘটনা নিয়ে রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে।
অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে এসে ঘটনাটি দেখছে। তাদের দাবি, এমন ঘটনা সত্যিই অলৌকিক। তাদের এলাকায় এমন ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি।