স্বপ্নীল দিগন্ত কাইনহা পদ্মবিল, দর্শনার্থীর ঢল

“ওহে পদ্ম ফুল!
ভোরের হাওয়ায় শীতল স্পর্শে দুলছো দোদুল -দুল।
কবিতার এই পঙক্তিগুলি পূর্ণতা পায় কেবল কাইনহা বিলে পদ্ম চাদরের বিছানায়।
কিশোরগঞ্জ জেলার কিশোরগঞ্জ-নীলগঞ্জ-তাড়াইল সড়কে তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের দড়িজাহাঙ্গীরপুড় গ্রামের কাইনহা বিলে জলের উপর বিছানো থালার মতো গোলাকার সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে লম্বা ডগার উপর দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে লাল সাদা পদ্ম।
অসংখ্য পাপড়ির চমৎকার বিন্যাসে সজ্জিত একেকটি পদ্ম যেমন সুগন্ধি ছড়ায়, তেমনি যেকোনো মানুষের হৃদয় কাড়ে সহজেই।
সরেজমিনে সোমবার (২৬ আগষ্ট ) কাইনহা পদ্ম বিলে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক একর পতিত জমিতে লাখ লাখ পদ্ম ফুল ফুটে আছে। দেখতে আসা দর্শনার্থীরা নিজেদের ইচ্ছামতো ফুল তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ স্মৃতিটুকু ধরে রাখতে ক্যামেরাবন্দি হচ্ছেন।বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলে আপলোড দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
পদ্মফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা দর্শক সাইফুল,কামাল, মিঠুন চন্দ্র ঘোষ সহ আরও অনেকেই বলেন, কাইনহা বিলের পদ্মফুল এবং পদ্মপাতা গুলো মানুষের মন জুড়ে প্রভাব বিস্তার করছে৷ বিলের বর্তমান দৃশ্যটি মানুষের মনে দাগ কাটছে। কাছে গিয়ে কাইনহা বিলের পদ্মফুল ও তার পাতাগুলো স্পর্শ করলে মনে হয় যেন সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে প্রবেশ করেছি।
জানা যায়- উপজেলার ঘোষপাড়া, দেওথান ও করিমগঞ্জ উপজেলার করণশি গ্রামের মাঝামাঝি স্হানে অবস্থিত কাইনহা বিল।
ছোট ডিঙিনৌকা দিয়ে ফুলপ্রেমীদের ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় এক ঘণ্টা ঘুরে বেড়ানো যায়। স্থানীয় অনেকেই নৌকা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন। আবার অনেকে হেঁটে যতদূর সম্ভব বিলপাড়ে গিয়ে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
বিলের আশপাশ এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনেক লোকের জনসমাগম হয় এই কাইনহা বিলে পদ্মফুল দেখার জন্য৷
সাংবাদিক ও প্রকৃতি প্রেমী মোহাম্মদ আলী আফতাব জানান,পদ্মবিলের সৌন্দর্য একনজর উপভোগ করতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ ছুটে আসছেন। পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সৌন্দর্য পিপাসুরা বিলটিতে ভিড় করছেন।
অনেক দর্শনার্থী মনের আনন্দে কিংবা ছবি তোলার জন্য ফুল ছিঁড়ছেন। অনেকে আবার ফুল ছিঁড়ে বাসায় নিয়ে প্রিয়জনকে উপহার দিচ্ছেন। এতে বিলটিতে পদ্মফুলের সংখ্যা দিনদিন কমে আসছে এবং বিলের সৌন্দর্যও বিনষ্ট হচ্ছে।এ অবস্থায় বিলটি সংরক্ষণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।