বন্যায় ডুবেছে বসতঘর, পিকআপ নিলো চোরে

এক বছর আগে ১০ লাখ টাকায় গাড়িটি কিস্তিতে কিনি। এখনো আমার তিন লাখ টাকা বকেয়া। এ গাড়ি ছাড়া উপার্জনের আর কোনো পথ নেই। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। সবাই মিলে আমার গাড়িটি উদ্ধার করে দিন। তা না হলে আমি নিঃস্ব হয়ে যাবো।’
এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন মো. রেজাউল হক (৬০)। এদিকে বন্যায় তার বসতঘর পানিতে ডুবে ধসে গেছে। তাই পরিবার নিয়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে উঠেছেন তিনি। এই আশ্রয়কেন্দ্রের সামনে থেকে তার পিকআপটি চুরি হয়ে যায়। এখন সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন রেজাউল হক।
তিনি দুঃখ করে জাগো নিউজকে বলেন, ‘বসতঘর নিলো বন্যায়, এখন পিকআপ নিলো চোরে’। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় অভিযোগ করেছেন তিনি।
রেজাউল হক জানান, চৌমুহনী পৌরসভার গনিপুর গ্রামে ভয়াবহ বন্যায় আমার বসতঘর ডুবে ধসে গেছে। পরে ২১ আগস্ট পরিবার নিয়ে বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রের পাঁচতলায় উঠি। ২৬ আগস্ট রাতে আমার পিকআপটি (চট্ট মেট্রো-ন-১১-৯২৮১) বিদ্যালয়ের গেটে রেখে ঘুমাতে যাই। ভোর ৬টায় এসে আর পাইনি গাড়িটি।
তিনি বলেন, গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসি। তাই এ বন্যায় লোকজনের সাহায্যের জন্য বিনা ভাড়ায় ত্রাণ কার্যক্রমে গাড়ি সরবরাহ করে আসছিলাম। তেলের টাকাও নিজের পকেট থেকে দিচ্ছি। সোমবার রাতে আশ্রয়কেন্দ্রের সামনে গাড়িটি রেখে ঘুমাতে গেলে চোরেরা গাড়িটি নিয়ে যায়। পরে একটি হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, রাত ২টা ৪১ মিনিটের দিকে চোরের দল গাড়িটি নিয়ে কুমিল্লার লাকসামের দিকে চলে যাচ্ছে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, পিকআপ চুরির অভিযোগ পেয়েছি। মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলছে। গাড়ি উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।