বাংলাদেশ দল নিয়ে যেসব প্রশ্ন তুললেন ভারত-পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা

২০ বছরের বেশি সময় ধরে টেস্ট ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ, প্রতি বিশ্বকাপেই বাংলাদেশের একই গল্প, বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রা নিয়ে এই কথা বলছিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তী ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরাম।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বাংলাদেশের বড় ব্যবধানে হারের পর দক্ষিণ এশিয়ার এই দলটির বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার কোনও আশাই আর নেই।
বাংলাদেশের এই বিশ্বকাপ যাত্রাকে গড়পড়তার চেয়েও খারাপ বলেছেন ওয়াসিম আকরাম।
পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল এ স্পোর্টসের ‘দ্য প্যাভিলিয়ন’ অনুষ্ঠানে বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে আলোচনায় ওয়াসিম আকরাম বলেন, “বাংলাদেশের সমর্থকদের জন্য আমার খারাপ লাগে।”
এই আলোচনায় গ্যালারিতে একটি প্ল্যাকার্ডের কথা উঠে এসেছে, যেখানে বাংলাদেশের একজন সমর্থক লিখেছেন, “সবসময়ই আমাদের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ।”
“দলটার ক্রিকেটারদের বয়স কম যেমন তানজিদ তামিম, তার সাথে আপনাদের থাকা উচিত। লিটন হতাশ করেছেন, শান্ত কী করেছেন আমি জানিনা, তার ওপর অনেক ভরসা ছিল, তিনে খেলেছেন, চারে খেলেছেন, কিছু করতে পারলেন না।”
ওয়াসিম আকরাম মনে করেন, বাংলাদেশের ব্যাটারদের নিয়ে কাজ করতেই হবে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, “ব্যাটার খোঁজেন আপনারা, ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে মনোযোগ দেন।”
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা বিস্তর আলোচনা করেছেন।
গতকাল ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও বলেছেন, “বাংলাদেশের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিক ছাড়া কেউই ভালো ব্যাট করতে পারেনি।”
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মঈন খান বলেছেন, “আগের ম্যাচে শতক হাঁকানোর পরেও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সাত নম্বরে কেন খেলানো হলো? যিনি ফর্মে থাকেন তাকে ব্যবহার করা দরকার ছিল।”
নেদারল্যান্ডসের ক্রিকেটের সাথে বাংলাদেশের ক্রিকেটের তুলনা দিয়ে মঈন খান বলেন, “ডাচদের দেখে মনে হয়েছে দল হিসেবে খেলছে।”
‘দল হিসেবে খেলতে পারছে না বাংলাদেশ’
একই কথা ইএসপিএন ক্রিকইনফোর আলোচনায় বলেছেন ভারতের প্রথিতযশা টেস্ট ক্রিকেটার চেতেশ্বর পুজারা, “বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন আছে, সাকিবের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন আছে এবং বাংলাদেশের খেলা দেখে মনে হয়েছে তারা একটা ইউনিট হিসেবে খেলছে না।”
পুজারার মতে, বড় টুর্নামেন্টে দল হিসেবে না খেললে আপনি কাগজে-কলমে কতোটা ভালো এটা দিয়ে বেশি ভালো করা যায় না।
নেদারল্যান্ডসের দলটাকে দেখে মনে হয়েছে তাদের একটা যথাযথ পরিকল্পনা রয়েছে এবং তারা সেটা দলগতভাবেই বাস্তবায়ন করছেন, বলেন পুজারা।
আয়ারল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার নিয়াল ও’ব্রায়ান বলেছেন, “ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালে নিশ্চিতভাবেই অনেক মানুষ কষ্ট পেয়েছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকরা খুবই নিবেদিত।”
সত্যিই তাই, শুধু বাংলাদেশে যারা থাকে তারাই নয়, বিশ্বের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশ সমর্থকদের জন্য একটা বাজে দিন ছিল শনিবার।
ঢাকা থেকে কলকাতার দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটারের কিছুটা বেশি, অনেকেই আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে কলকাতায় ম্যাচ দেখতে গিয়েছেন।
গত রাতে ম্যাচের একটা পর্যায়ে দেখা গেছে, খেলা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হওয়ার অনেক আগেই মাঠ ছেড়ে বের হয়ে যাচ্ছেন দর্শকরা।
বিমর্ষ ও হতবাক এই ক্রিকেট অনুরাগীরা মুখে হাসি নিয়ে মাঠে ঢুকেছিলেন, বের হয়েছেন পরাজয়ের স্মৃতি নিয়ে।
সমর্থকদের একজন বলছিলেন, “মনে হচ্ছে ২০০৩ সালে ফিরে গেছি। তখন আমরা কেনিয়া, কানাডার বিপক্ষে হারতাম।”